বিসিএস চিন্তা: পিএসসি সমীপে- প্রথম আলো





দৈনিক প্রথম আলো
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

বিসিএস চিন্তা: পিএসসি সমীপে
কিছুদিন আগে প্রথম আলোর সম্পাদকীয় পাতার মতামত সেশনে সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার ৩৮তম থেকে পরবর্তী বিসিএস পরীক্ষার লিখিত অংশে নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। ৯০০ নম্বরের পরিবর্তে ৫০০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া, ইংরেজি বিষয়ে নম্বর বৃদ্ধিকরন ইত্যাদি বিষয়ের বিপরীতে তিনি নিজস্ব প্রস্তাবনা দিয়েছেন। তিনিও ইংরেজি বিষয়ে নম্বর বৃদ্ধির কথা বলেছেন এবং সম্ভব হলে সম্পুর্ন পরীক্ষা পদ্ধতি ইংরেজি মাধ্যমে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
কিন্তু বিপিএসসি (বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন) কর্তৃক গৃহীত বিগত বিসিএস লিখিত পরীক্ষাসমূহের প্রশ্নপত্র পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় -
৩৫ ও ৩৬ তম লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সম্পূর্ন বাংলা ভাষায় করা হয়েছে (ইংরেজি বিষয় ব্যতিত)। এমনকি পেশাগত ক্যাডারের (সাবজেক্টিভ) প্রশ্নপত্রও বাংলায় করা হয়েছে। অথচ প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকাংশ বিষয় (সাবজেক্টস) ইংরেজি মাধ্যমে অধ্যয়ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর তাই পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঁচ বছর ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার পর নিজ সাবজেক্টের বাংলা প্রশ্ন দেখে পরীক্ষার্থীদের অবাক হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা।
আবার ৩৬ তম তে কিছু বিষয়ে প্রশ্নের মাঝে শব্দের ইংরেজি পরিভাষা ব্যাবহার করা হয়েছে (যেমন-সাধারন বিজ্ঞান, প্রশ্ন নং ৪, ৮ ও ৯)। যেগুলো পরীক্ষার্থীরা সাধারনতো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক লেভেলের বাংলা মাধ্যমের বই থেকে পড়ে থাকে। যার ফলে শব্দগুলির ইংরেজি পরিভাষা দেখলে খাবি খেতে হয়।
অথচ ইতোপূর্বে সকল প্রশ্নপত্র বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষায় করা হতো। যার ফলে পরীক্ষার্থী যে মাধ্যমেই অধ্যয়ন করুক না কেন প্রশ্ন বুঝতে কোন সমস্যা হতোনা।
আবার ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, যে সকল পরীক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় ফেল করেন তাদের অধিকাংশই ইংরেজি বিষয়ে ফেল করে থাকেন। শুধু তাই নয়- সুপারিশ প্রাপ্ত ক্যাডারদের ইংরেজিতে দুর্বলতা দুর করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হয়। এমনকি এজন্য বিপিএসসিকে "সাইফুর'স" এর মত কোচিং সেন্টারের সহায়তা নিতে হয়। তাই বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ইংরেজি বিষয়ে নম্বর বৃদ্ধির যৌক্তিকতা রয়েছে।
সম্পূর্ন আলোচনাকে এক কথায় বললে বলা যায়, একই সাথে ইংরেজি বিষয়কে গরুত্ব দেওয়া এবং শুধুমাত্র বাংলা মাধ্যমে প্রশ্নপত্র তৈরি এক ধরনের বৈপরীত্তের (Contradiction) সৃষ্টি করে। যা পরীক্ষার্থীদের মনে ভীতি ও উদ্বেগের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
সুতরাং বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিশদভাবে আলোচনার জন্য বিপিএসসির দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

ধন্যবাদ।
মোঃ রেজাউল হক
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
reza4206@gmail.com

Popular posts from this blog

সেকায়েপ শিক্ষকদের দৈন্যদশা-সমকাল

উদ্যোগ নেওয়া জরুরি নয় কী?- কালের কন্ঠ

একদিন স্বপ্নের দিন