বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায়ের দিন
২০১৫। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিদায়ের দিন। ছাত্র জীবনের পরিসমাপ্তি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়তে পারাকে সৌভাগ্য মনে করতাম। কিন্তু ছাত্র জীবন
শেষ করে দেখলাম বাস্তবতা ভিন্ন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন
সবার কাছেই একটা
আলাদা স্মৃতি হিসেবে চিহ্নিত। সেই দুরন্ত ছুটে চলা, চা স্টলে বসে ঝগড়া,
পড়ুয়াদের জালাতন, বখটেদের উৎপাত, স্যারদের সাথে দুষ্টমি, ছাত্রীদের সাথে ন্যাকামি, সারাবছর না পড়ে পরীক্ষার আগে লাইব্রেরীকে নিজের ঘর বানানো, ফেসবুকে অযথা
লাইক মারা (বিশেষ
করে মেয়েদের ছবিতে),
কাউকে পড়তে দেখলেই-’কত পড়েরে’-টাইপের মন্তব্য, ক্লাস না করে ভালো ছাত্রের লেকচার সংগ্রহ, সেই লেকচার কেউ নিজের
কাছে নিতে আসলেই
মুখ বাঁকা করা,
কেউ ভালো রেজাল্ট করলে তার দিকে
বাঁকা চোখে তাকানো, দিনে ৩ বার রাতে ৬ বার পশ্চিমপাড়ায় (ছাত্রী হল এলাকা) ঢুঁ মারা,
ডিপার্টমেন্টের সামনে বসে থাকা চাতক পাখির
মত- এমন অনেক
স্মৃতি আজ ও মনের কোনে উঁকি
মারে।
সেই মজার জীবনের সমাপ্তির দিনেও প্রাপ্তির অনেক কিছু ছিল। স্যারদের হাত থেকে ক্রেস্ট নেওয়া,
তাঁদের সুন্দর উপদেশ
শোনা, পরস্পরকে রজনীগন্ধা ফুল দেওয়া, একজনের ফুল আর একজন চুরি
করে আর একজনকে দেওয়া, পরস্পরের সাথে ছবি তোলার হিড়িক
(বিশেষ করে মেয়েদের সাথে), সেলফি তোলা, বন্ধুদের সুন্দর পোশাকে-”তোকে কিউট লাগছেরে” টাইপের মন্তব্য করা। অতপর কান্নকাটি করে বিদায় নেওয়া।
মাঝে মাঝে মনে হয়-”ওই জীবনে যে সুখ আছে, নাইরে
সে সুখ রাজার
ঘরে”। ইচ্ছে হয় আবার ফিরে
যাই। আর একবার
সেই পরীক্ষায় অংশ নেই যেদিন জানি
না কি পরীক্ষা হবে, আর একবার
কাউকে ফোন করে বলি- ”দোস্ত কাল কি কি ক্লাস
হবে”, ভাঙ্গা মুড়ির টিনের মত বাসে চড়ে আর একবার সাহেব বাজারে যাই, আর একবার
বন্ধুকে বলি দোস্ত-
”জটিল মাল যাচ্ছে”, আর একবার
বন্ধুর দরজায় খটখটিয়ে বলি-”দোস্ত তোর এস্ট্রোনমি নোট টা একটু দে”, আর একবার ফেসবুকে স্ট্যটাস দেই - ” কাল এবি স্যারের পরীক্ষা আছে কিংবা কাল ১২ টায় এসএস
ম্যাডামের ক্লাস হবে”।
ছাত্র জীবনের মজা বুঝে
ওঠার আগেই ছাত্র
জীবন শেষ।